জীবনের চলার পথে…!!!

avatar


Source


জীবন বড়ই বৈচিএময়!! জীবনকে বোঝা না যত কঠিন তার থেকেও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া। আজ কথাগুলো লিখছি আর ভাবছি আরে এতো সিরিয়াস কি হল! আসলে আশেপাশে আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত কতোই না ঘটনা ঘটছে, কতো মানুষই না আছে যারা দিমের পর দিন শুধু কষ্ট করছে জীবনে বেঁচে থাকার তাগিতে। বিশেষ করে যদি বলি মানুষ যত উপরের দিকে উঠে তখন নিজেদের মধ্যে দাম্ভিক একটা ভাব চলে আসে, সেই দাম্ভিকতা আমাদের জীবনকে শুধু বাহ্যিক দিক থেকেই শান্তি এনে দেই, কিন্তু সামগ্রিকভাবে আমাদের অন্য কোন জগতের দিকে ঠেলে দেই যা কখনোই কাম্য নাই।

আমি একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান,সুখ যেমন দেখেছি ঠিক তেমন অভাব অনটন ও দেখেছি। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত গুলো আমার মনে সব সময়ই নাড়া দেই। বাবা মা এরা হলো আমাদের জীবনে বিশাল ছাদ, আর পরিবেশ হলো আমাদের জীবনের এক বিরাট অংশ। বাবা মা আমাদের আচার আচরণ শিখা দিখা দিয়ে বড় করে আর পরিবেশ সেই শিখকে পপরিণত করে। সময়ের সাথে বাধাঁ আমাদের এ ছোট্ট জীবনে।

আজ বিকেল বেলা হঠাৎ মনে হলো একটু ঘুরে আসি বাহির থেকে, ঠিক যেই ভাবা সেই করা, তারীহুরো করে রেডি হলাম আর বেরিয়ে পড়লাম। বিকেলে একটু হেটে বেড়নোর অভ্যাসটা বহুদিনের, যখনই বের হয় ক্যাম্পাস পুরোটা একটা রাওন্ড দেয়।আজ যখন বের হলাম পরিবেশটা অনেক টাই ঠান্ডা ও মৃদু বাতাস বইছে , দক্ষিণা বাতাস মনটা কেমন যেন আলোরণ দিয়ে উঠল। হাঁটছি হঠাৎ এক বন্ধুর সাথে দেখা, ছোটবেলার বন্ধু, কিছুক্ষন দুই বন্ধু মিলে গল্প করলাম, কথা শেষে আবার হাঁটা শুরু করলাম। মনে মনে ভাবছি ছোটবেলায় কতোই না দুষ্টুমি করতাম, এদিক সেদিক ছুটে বেড়াতাম, সারা বিকেল বন্ধুদের সাথে খেলে ঠিক সন্ধেবেলা ঘরে ফিরতাম, কি আনন্দেরই না ছিল দিনগুলো। আর এখন সবাই যে যার মতো ছুটছে, নিজেদের জীবন নিয়ে সবাই কেমন হঠাতই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

হাঁটছি, হেটে ক্যাম্পাসের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে এসেছি, কখন যে সন্ধে হয়ে গিয়েছে টেরই পেলাম না। আজকাল এমনটা প্রায় হয় নানারকম চিন্তা ঘোরে মাথার ভিতর, হাঁটতে বেড় হলে একটু বেশিই হয়। এসব ভাবতে ভাবতে মনে পড়ল আজ তো সবেবরাত, রাতে নামাজ পড়তে হবে। ছোটবেলায় শবে বরাতের রাতে নামাজ শেষে বন্ধুদের সাথে সারা রাত ঘুরে বারাতাম। আর সন্ধে হলে মার হাতের চালের রুটি, বরফি, সুজির হালুয়া, আর সাথে মাংসের ঝোল, ভাবতেই জিববাই পানি চলে এলো। মার হাতের বরফির সাদ ই আলাদা, কম করে হলেও ৩-৪ খানা চালের রুটি তো আমি শুধু বরফি দিয়েই খেয়ে ফেলতাম।


বাবা শুনছো?? পিছন থেকে কে যেন ডাক দিল! আমি কিছুটা চমকে গিয়ে পিছনে ঘুরে তাকালাম, দেখলাম একজন বয়স্ক লোক আমার দিকে এগিয়ে আসছে। লোকটার দেখতে আমার নানার বয়সের হবে, তা নাহলেও ৬০-৬৫ তো হবেই। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম জি আমাকে বলছেন। লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে খুব নরম শুরে বলল হে বাবা তোমাকেই ডাকছি। আমি বললাম জি বলেন! লোকটি কাঁদ কাঁদ স্বরে বলল বাবা আজ শবে বরাত, আমার বাসায় ভালমন্দ খাওয়ার কিছু নেই, আমার নাতি দুটো আজ আবদার করেছে মুরগীর মাংশ দিয়ে ভাত খাবে আজ, কিন্তু সারাদিন ভিক্ষা করেও এখনও টাকা ঝুটোতে পারিনি, আমাকে তুমি যদি একটা মুরগী কিনে দিতে!!!

আমি কিছুক্ষণ ভেবে লোকটাকে আমি তাকে মুরগী কিনার জন্য টাকা টা দিলাম আর বললাম আমার জন্য দোয়া করেন। কিন্তু লোকটি টাকা টা নিতে চাইল না, বলল বাবা আমি টাকা নিব না তুমি যদি আমাকে নিজ হাতে মুরগী কিনে দাও তাহলেই সেটা নিব। আমি আর বেশিক্ষণ দেরি না করে তাকে নিয়ে মুরগীর দোকানে গেলাম, আর একটা মুরগী কিনে দিয়ে বিদায় নিবো এমন সময় লোকটা কান্না করতে বললো বাবা আল্লাহ তোমার ভাল করুক। আমি শেষমেশ তার কাছ থেকে আমি বিদায় নিলাম। যাওয়ার সময় ভাবছিলাম কতো সময় কত টাকা আমরা নষ্ট করি, আজ কেন জানি অনেক শান্তি লাগছে নিজের মনের ভিতর। এ এক অদ্ভুত ভাল লাগা যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।



0
0
0.000
1 comments
avatar
(Edited)

অসাধারণ লিখেছেন ভাইয়্যা আর সত্যিই কিছু মানুষকে খুশি করানোর জন্য সামান্য কিছুই যথেষ্ট। পড়ে ভালো লাগলো আপনার লিখাটা ভাইয়্যা।

0
0
0.000