জীবনের সার্থকতা
pexel.com
আগের যুগের বেশির ভাগ মানুষের প্রথম আগ্রহ ছিলো খাদ্য সংগ্রহেই।তাই তাদের সময় এখানেই ব্যয় করতো। পরবর্তীতে বাসস্থান ও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালো। এখন সেই বাসস্থান এর সমাধান ও যদি হয়ে যায় তারপর সবাই আনন্দ খুঁজে বেড়াতে লাগলো। একটা সময় ছিল বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আনন্দ পাবার চেষ্টা করতো সবাই। সেটা হতে পারে খেলাধুলা বা ঘুরে বেড়ানো! এখন দিন দিন তার সাথে যোগ হয়েছে নিজেকে সুন্দর ভাবে অন্যদের সামনে উপস্থাপন করা।যেমন, সুন্দর জামা পরা বা সুন্দর ভাবে চুল কাঁটা, তাতে রঙ করা,এই সব কিছুই কিন্তু অন্যের কাছে নিজেকে সুন্দর দেখানোর জন্য। একটা সময় ছিল মানুষ শুধু জীবনসঙ্গী খুজতো ,যার সাথে মন মানসিকতা মিলবে এবং যার সাথে সারাটা জীবন সুন্দরভাবে কাটানো যাবে ।সেটাই চিন্তা করতো। আর এখন ভাবে বিয়ের ছবিতে কাকে বেশী সুন্দর দেখা যাবে, কার পেশা কে সমাজে বড় করে বলা যাবে!
তিন হাজার বছরের মানব সভ্যতায় মানুষ সভ্য হবার চেষ্টা করে এসেছে। এখন সভ্যতার চরম শিখরে বসে আমাদের ধ্যান জ্ঞান হলো কিভাবে অন্য মানুষের চোখে নিজেকে সুন্দর দেখানো যায়। কিভাবে সবার কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়া যায়:(
প্রতিটি যুগে, প্রতিটি শতাব্দীতে, প্রতিটি সহস্রাব্দে কিছু মানুষ এসেছে যাদের কাছে এই বিষয়গুলো ছাড়াও অন্য কিছু প্রশ্ন তাদের মাথায় উঁকি দিয়েছে।যার জন্য নতুনত্ব এর সৃষ্টি! আমরা কারা, কেন এসেছি পৃথিবীতে, আমাদের কাজটা কি। এই সাধারন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে পারছে না কেউ!
প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে এই প্রশ্নগুলোই এসেছিল সক্রেটিস নামে এক ব্যাক্তির মাথায়। তিনি তখন বেড় হয়েছিলেন এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে। তিনি মানুষের রুটিন জীবন যাপন দেখে অবাক হয়েছিলেন। কিভাবে মানুষ দিনের পর দিন একই কাজ করে যাচ্ছে। তারপরে একটি সময়ে মারা যাচ্ছে। তিনি যখন মানবজীবন কে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বোঝার চেষ্টা করছেন তখন বলা হল তিনিই এই পৃথিবীর সবচেয়ে জ্ঞ্যানি ব্যক্তি। কিন্তু সক্রেটিস একথা মানতে পারলেন না। বেড় হলেন তার থেকে জ্ঞ্যানি ব্যক্তির খোঁজে। অনেক খুঁজে যখন ফিরে এলেন তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল যে কি বুঝতে পারলেন। তখন তিনি বললেন যে " আমি জানি যে আমি জানি না কিন্ত বাকি সবাই জানে না যে তারাই জানে না" সক্রেটিস হয়তো তার প্রশ্নের উত্তরগুলো পাননি বা পেয়েছেন। কিন্তু তখন থেকেই জীবনের অর্থ খোঁজা শুরু হয়ে যায় গুটিকয়েক মানুষের কাছে।
বর্তমান এই উন্নত সময়ে এবং টেকনোলজির এত উন্নতির পরে মানুষের আনন্দের কোনও অভাব নেই। ঘুরতে যাওয়া, রেস্টুরেন্টে খাওয়া, সিনেমা দেখা, জামাকাপড় কেনা এবং সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিজেকে অন্যের চোখে সুন্দর প্রমান করা। এই এত এত সুখের জীবনের মাঝেও কিছু মানুষ জীবনের অর্থ খুঁজে বেড়ায়। সঙ্গিনী খুঁজে বেড়ায় যার সাথে তার মানসিকতার মিল থাকবে। থাকতে চায় মানুষের এই নিজেকে দেখানোর পাগলামি প্রতিযোগিতার বাইরে। জীবন যেহেতু একটাই, মানসিক শান্তিই একমাত্র লক্ষ্য। আর জীবনকে বোঝার চেয়ে শান্তির আর কি হতে পারে? এখন এটাই জীবন, মেনে নিতেই হবে আর কি!
Congratulations @rodmila! You have completed the following achievement on the Hive blockchain and have been rewarded with new badge(s) :
Your next target is to reach 600 upvotes.
You can view your badges on your board and compare yourself to others in the Ranking
If you no longer want to receive notifications, reply to this comment with the word
STOP
Check out the last post from @hivebuzz: