আমাদের অনুকরণপ্রিয়তা

আমরা একে অপরকে অনুকরণ করতে এতো ভালোবসি কেন? মানুষ একজন থেকে দেখে আরেকজন একটি কাজ করে।ভালো-খারাপ বিবেচনায় এর গ্রহণযোগ্যতায় মত-দ্বিমত রয়েছে। তবে সার্বিক দিক বিবেচনায় অনুকরণ প্রিয়রা বর্জন করা উচিত। এই অভ্যাসটা আমাদের নিজেদের নিজস্ব যে চিন্তা-ভাবনা বা নতুন কিছু করার যে ক্ষমতা তা নষ্ট করে দেয়।আমাদেরকে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে বাচতেঁ শেখায়।যেটি কিখনো কাম্য নয়।

ইতিবাচক দিকঃ মাঝে মাঝে এর মধ্যে ভালো একটি দিকও রয়েছে।যেমন আপনার আশে-পাশের মানুষজন একটা ভালো কাজ করছে।মনে করেন সবাই ৫ টা করে গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এখন আপনিও তাদের দেখা দেখি ৫ টি গাছ লাগান।পারবেন? এসব বিষয় অনুকরণ সমাজ কতৃক গ্রহনযোগ্য।

পড়ালেখার ক্ষেএে ছোট শিশুদের মাঝে দেখা যায় তার একজন এর দেখাদেখি অন্যজন ও একই কাজটি করতে উদ্ভুদ্ধ হয়।তারা সহজের একজনের থেকে অন্যজন পড়ালেখায় একটা প্রতিযোগিতা পূর্ন মনোভাব নিয়ে সবকিছু সম্পন্ন করে থাকে। আমার ব্যক্তিগত একটা বিষয় বলি-ব্লকচেইনে আমার পদার্পণ ও এই অনুকরণ প্রিয়তার কারনের হয়েছে।বন্ধুর থেকে দেখে নিজেও এর প্রতি আগ্রহী হয়ে পরি আর যুক্ত হয়ে যায় এই নতুন মাধ্যমের সাথে। আমার ক্ষেএে এই অনুকরণপ্রিয়তা টি আশির্বাদ হয়ে এসেছে।

IMG_20200903_18281201.jpeg

নেতিবাচক দিকঃ সকল জিনিষের ই একটা ভালো ও মন্দ উভয় দিক রয়েছে তেমনি অনুকরনের বিরুপ দিকটি হচ্ছে ধীরে ধীরে নিজের গুণাবলি সমূহ বিসর্জন দিয়ে সবকিছুতে অন্যের অনুকরন করা।এমনকি কোনো একটা কাজ করতে গেলেও অন্যেরটা দেখে দেখে করা যেটাকে আমরা চুরি করা বলে থাকি।এভাবে এক-দু বার পার পেয়ে গেলেও হঠাৎ যখন উপলব্ধি আসবে তখন যেন বড্ড দেরি না হয়ে যায় সেই আশঙ্খা রয়েছে।

আমাদের সামাজিক জিবনেও এই জিনিষটা ভয়াবহ আকারে বিস্তৃতি লাভ করেছে।মানুষ সকল কিছুটে একে অন্যকে অনুকরণ করে। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় ট্রেন্ডি বাঙালি। কোনো একটা কিছু পেলে সকলে তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে।


আজকে একটি কষ্টদায়ক ঘটনা শেয়ার করি।জানিনা এইটা এখানে বলা ঠিক হবে কিনা তাও প্রসজ্ঞের খাতিরে বলা।
আমার একটি স্কুল জীবনের বন্ধু ছিল।সে কলেজে উঠে নতুন বন্ধু-বান্ধবের সাথে জড়িয়ে গেল।সেখানে সে দেখল মোটামুটি ওই গ্রুপের অনেকের ই মোটরবাইক আছে কিন্তু তার নেই। জিনিষটা ও পর্যবেক্ষণ করে তাদের দেখা দেখি সেও এখন বাইক নিবে। বাড়িতে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে অবশেষে বাইক নিয়ে নিল। যাইহোক ওয়ে চালক হিসেবে খুব ই ভালো ছিল কিন্তু একদিন আমাদের নতুন ফ্লাইওভারে সে বাইক সহ একটি এক্সিডেন্টে আহত হয়। আমার বন্ধুটি এখনো বিছানায় পড়া। কথা বলতে পারেনা,খেতে পারেনা নল দিয়ে খাওয়াতে হয়।ওর আঘাত টা ছিল মাথায়। ওর জীবন এখন এক জীবন্ত লাশের মতো।ওর মাকে দেখলে খুব কষ্ট হয়। আন্টি আমাদের দেখলে তার সন্তানের আগের রুপ কল্পনা করে খুব কান্নাকাটি করে।সে প্রায় দু-বছর হতে চলছে এই অবস্থা। দোয়া করবেন সবাই।


কি লিখতে গিয়ে কি লিখে ফেল্লাম।অনুকরণপ্রিয়তার সর্ম্পকে লিখতে গিয়ে প্রিয় বন্ধুর কষ্টকর কাহিনী নিয়ে আসলাম।জানিনা লিখাটি ঠিক হলো কিনা।তবে সবার কাছে লিখাটি শুরুর দিকে যে জিনিষটা বোঝাতে চেয়েছিলাম সেটা হলো আমাদের ভালো কাজে অনুকরণ করা উচিত।এমন কিছুতে নয় যেটা আমাদের নিজস্ব সত্তা কে পরাজিত করে দিবে।আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন।আজ আর নই ভালো থাকবেন।ধন্যবাদ।



0
0
0.000
1 comments