ব্যাটেল অব মারিৎজা বা চেরনোমেনের যুদ্ধ

avatar

আজ অটোমানদের এমন একটি যুদ্ধের কথা বলবো, যে যুদ্ধে ৭০ হাজার ক্রুসেডার ৮০০ অটোমান যোদ্ধার কাছে পরাজিত হয়। যুদ্ধটি ইতিহাসে সেকেন্ড ব্যাটেল অভ মারিৎজা বা মারিৎজার দ্বিতীয় যুদ্ধ নামে পরিচিত। তাছাড়া সার্বিয়ান সাম্রাজ্য পতনের মূলেও এই যুদ্ধ।

ইতিহাসে যে সকল সাম্রাজ্যের উপাখ্যান গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম অটোমান সাম্রাজ্য । এমন একটি সময়ে অটোমান সাম্রাজ্যের বীজ বুনন হয় ওসমান গাজির হাত ধরে যখন মোঙ্গল তাণ্ডবে জ্বলছে অর্ধেক পৃথিবী। অন্যদিকে সেই সময়টাতে চলছিলো মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যকার ধর্মযুদ্ধ ক্রুসেড।

মোঙ্গল আক্রমণে আব্বাসীয় খিলাফতের পতন হওয়া সত্ত্বেও , তখন আরবসহ এশিয়া মাইনরের বিভিন্ন অঞ্চলে বাইজেন্টাইন খ্রিস্টান সাম্রাজ্যের পাশাপাশি টিকে ছিল মুসলমানদের সেলজুক সাম্রাজ্য। কিন্তু ক্ষমতার দিক বিবেচনায় সেলজুক সাম্রাজ্য পূর্বের উমাইয়া বা আব্বাসীয় খিলাফতের মতো অপ্রতিরোধ্য ছিল না।

একটি খণ্ডযুদ্ধে সেলজুক সম্রাট আলাউদ্দিনকে সহায়তার তওফা (পুরস্কার) স্বরুপ জায়গির হিসেবে আরতুরুল কিছু জমি পান। যে জমিটি আরতুরুলকে দেওয়া হয়, মূলত সেটি ছিল আনাতোলিয়ায় সেলজুক সাম্রাজ্যের শেষ সীমান্ত ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের শুরু।

তার কয়েক বছর পরই সেলজুকরা প্রভাব হারাতে শুরু করে আনাতোলিয়ায়। আরতুরুলের মতো যাযাবর ওঘুজ গোত্রের বাকি গোত্র প্রধানরাও সেলজুকদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে থাকে। একসময় সেলজুকরা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হারায় আনাতোলিয়ায় এবং ক্রমেই স্বাধীন হয়ে ওঠেন আরতুরুল এবং পরে তার ছেলে ওসমান গাজি।

অত্যন্ত বিনয়ী ও বীর যোদ্ধা ওসমানের নিয়ন্ত্রিত এলাকা দিনকে দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। তার বংশধরেরা তার বিজয়ের ধারা বজায় রাখে। একটি বৃহৎ বৃক্ষে রূপ নেয় ওসমান গাজির সাম্রাজ্যের বীজ , যা পরবর্তীকালে পরিচিতি পায় ওসমানীয় বা অটোমান সাম্রাজ্য হিসেবে।

অটোমানরা ১৩৫২ সালের পর আনাতোলিয়ায় বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চল জয় করে নেয় । অন্যদিকে আবার সার্বিয়ান সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে সার্বিয়া-বসনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, দক্ষিণ হাঙ্গেরিসহ গ্রিসের (বলকান অঞ্চল) কিছু অংশ নিয়ে। বলে রাখা ভালো, সার্বিয়ান সাম্রাজ্যসহ ইউরোপের অধিকাংশ খ্রিস্টান শাসকরা ছিল ক্যাথলিক খ্রিস্টান, অন্যদিকে রোমান বাইজান্টাইনরা ছিল অর্থোডক্স খ্রিস্টান। প্রটেস্ট্যান্ট চার্চের জন্ম হয়নি তখনও। ক্যাথলিক খ্রিষ্টানরা মুসলিমদের যতটা ঘৃণার চোখে দেখত, ঠিক ততটাই দেখত অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের। যার ফলে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য যেমন অটোমানদের তোপের মুখে ছিল, তেমনি সার্বিয়ানদেরও। দুই সাম্রাজ্যের এমন তোপের মুখে বাইজেন্টাইনদের টিকে থাকাই ছিল প্রায় অসম্ভব। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বও ছিল বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যে। আর অটোমানরা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের এই দুর্বলতাগুলোকে কাজে লাগায় বেশ ভালোভাবে।

অটোমানরা বাইজেন্টাইনদের কাছে থেকে মিত্রতার প্রস্তাব পেলে কৌশলগত মিত্রতা গ্রহণ করে। এবং এর ফলে, প্রথমবারের মতো অটোমানরা ইউরোপে প্রবেশের সুযোগ পায় এবং বাইজেন্টাইন সম্রাটের মিত্রতা কাজে লাগিয়ে সার্বিয়ানদের সাথে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে জয়লাভ করে। আধুনিক সার্ব বাহিনীর বিরুদ্ধে গাজি যোদ্ধাদের সফলতার প্রভাবে অটোমানরা সমগ্র ইউরোপে আতঙ্করূপে আত্মপ্রকাশ করে। এতে করে বাইজেন্টাইন এবং সার্ব উভয় শাসকরাই বুঝতে পেরেছিল, খুব শীঘ্রই অটোমানরা স্থায়ীরূপে বলকান অঞ্চলে প্রবেশ করবে, কিন্তু তারা হয়তো তখন মিত্রতার প্রস্তাব নিয়ে আসবে না, আসবে ইউরোপ জয় করতে।

অটোমানরা ইউরোপের প্রবেশদ্বার গাল্লিপলি ক্রুসেডারদের কাছ থেকে দখল করে নিলে বাইজেন্টাইনদের সাথে অটোমানদের মিত্রতায় ফাটল ধরে। বাইজেন্টাইন সম্রাট গাল্লিপলির দখল ফেরত চাইলে অটোমান সুলতান ওরহান তাতে অস্বীকৃতি জানান কারন গাল্লিপলি জয়ের মাধ্যমেই অটোমানদের সামনে খুলে যায় ইউরোপের দরজা।

Murad_IV (1).jpg

Source

দাদা ওসমান ও বাবা ওরহান গাজির মত সুলতান মুরাদও ছিলেন বীর যোদ্ধা, সেই সাথে বিচক্ষণ রাজনৈতিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী। ১৩৫৯ সালে সুলতান মুরাদ অটোমান সালতানাতের সিংহাসনে বসেন এবং ওসমান গাজির ছোট আমিরাত আনাতোলিয়া ছাড়িয়ে এবার ইউরোপের দিকে অগ্রসর হন। সুলতান মুরাদ সিংহাসনে বসেই সালতানাতের অভ্যন্তরীণ সংস্কারকার্যে মনোনিবেশ করেন এবং গড়ে তোলেন দুর্ধর্ষ জানিসারী বাহিনী, পরবর্তীকালে যে বাহিনী ৬০০ বছর দাপিয়ে বেড়িয়ে ছিল ইউরোপ থেকে পুরো মধ্য-পৃথিবীর আনাচে-কানাচে। পুরো সালতানাতের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ, ভূমি আইন সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের পাশাপাশি দক্ষ হাতে বৃদ্ধি করেন সাম্রাজ্যের সীমানাও।

১৩৬২ সালের পর বলকান অঞ্চলের অ্যান্ড্রিয়ানোপল, বুলগেরিয়া, মেসিডোনিয়া ও সার্বিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল সুলতান মুরাদ জয় করে নেন। সেই সময় তিনি বাইজেন্টাইন ও সার্বিয়ান সাম্রাজ্য থেকেও কর আদায় করা শুরু করেন।

অটোমান সাম্রাজ্যকে তখন দুটি প্রদেশে বিভক্ত করা হয়। একটি আনাতোলিয়া (এশিয়া মাইনর), অন্যটি রোমেলিয়া (বলকান অঞ্চল)। সুলতান মুরাদ ছিলেন আনাতোলিয়ার দায়িত্বে ছিলেন আর রোমেলিয়ার দায়িত্বে ছিলেন সুলতানের শ্রদ্ধাভাজন লালা শাহীন পাশা।

ততদিনে সার্বিয়ান সাম্রাজ্য অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল সেই সাথে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যও প্রভাবহীন হয়ে পড়ে। তবে সার্বিয়া-বসনিয়ার রাজা, বাইজেন্টাইন কাইজার ও হাঙ্গেরির সম্রাট কূটনৈতিকভাবে একত্র হন, অটোমানদের ধ্বংস করতে। তারপরও তারা কেউ সরাসরি অটোমানদের আক্রমণ করার মনোবল পাচ্ছিলেন না, এমতাবস্থায় তুরুপের তাস হয়ে যুক্ত হন স্বয়ং পোপ। আবার ৬০ বছর পর ক্রুসেডের ডাক আসে। এবার প্রতিপক্ষ অটোমান, উদ্দেশ্য বলকান অঞ্চলের অটোমান রাজধানী অ্যান্ড্রিয়ানোপল দখল করে ওসমানীয়দের সমূলে ধ্বংস করে দেওয়া।

মারিৎজার ১ম যুদ্ধে প্রায় ৩০ হাজার ক্রুসেডার, সার্বিয়ান রাজা ভুকাসিনের নেতৃত্বে অ্যান্ড্রিয়ানোপলের দিকে যাত্রা শুরু করে। কোনো বাধা ছাড়াই দু'সপ্তাহ পর ক্রুসেডার বাহিনী অ্যান্ড্রিয়ানোপলের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যায়। সুলতান মুরাদ তখন ব্যস্ত ছিলেন থ্রেস অঞ্চলে বাইজেন্টাইনদের সাথে যুদ্ধে, অন্যদিকে লালা শাহীন পাশা ছিলেন এশিয়া মাইনরে। নেতৃত্বে থাকা সার্বিয়ান রাজা ভুকাসিন ভাবলেন, হয়তো এ সুযোগে যুদ্ধ ছাড়াই অ্যান্ড্রিয়ানোপল জয় করে নিতে পারবেন।

অ্যান্ড্রিয়ানোপল থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটারের দূরত্বে মারিৎজা নদীর তীরে ক্যাম্প করেছে ৩০ হাজার ক্রুসেডার। যুদ্ধ জয়ের পূর্বেই গভীর রাতে, ভুকাসিনের সৈন্যরা উদযাপনে ব্যস্ত, মদ আর নারী নিয়ে।

এদিকে লালা শাহীন পাশার গুপ্তচররা ক্রুসেডারদের প্রত্যেকটি গতিবিধি খেয়াল রেখেছেন। শাহীন পাশাও গুপ্তচরদের তথ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসছেন ১০ হাজার সৈন্য নিয়ে। অ্যান্ড্রিয়ানোপলে কিছুতেই ক্রুসেডার বাহিনীকে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। মারিৎজার তীরে যখন ১০ হাজার যোদ্ধা পৌঁছালো, ততক্ষণে গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন মাতাল ক্রুসেডাররা।

গাজিরা কখনোই ঘুমন্ত শত্রুর উপর আক্রমণ করে না, তাই 'হাইদির আল্লাহ!' বলে চিৎকার করে ক্রুসেডারদের সতর্ক করে দিল। বিকট এই চিৎকারে ঘুম ভাঙে ক্রুসেডারদের।

জেগে উঠেছে ক্রুসেডার শিবির , আকস্মিক আক্রমণের শিকার হওয়া ক্রুসেডাররা ভাবলো, সুলতান মুরাদ বিশাল বাহিনী নিয়ে আক্রমণ করেছেন। উপায় না পেয়ে ক্রুসেডাররা দিগ্বিদিক ছুটতে শুরু করে। যারা অস্ত্র তুলে নিয়েছিল, তারাও শাহীন পাশার হাত থেকে রক্ষা পায়নি। মৃত্যুবরণ করে কিছু গাজি যোদ্ধাও, রক্ষা পেয়ে যায় অ্যান্ড্রিয়ানোপল।

Vukasin_ugljesa_1371_en.png

Source

১ম মারিৎজার যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ১৩৭১ সালে রাজা ভুকাসিন পুনরায় সৈন্যদলকে সংগঠিত করেন পরাজয়ের গ্লানি মুছতে। একদিকে অটোমানদের আকাশচুম্বী প্রভাব অন্যদিকে মারিৎজার পরাজয় কোনটাই সহ্য করতে পারছিলেন না রাজা ভুকাসিন। তাই ভুকাসিন এবার অধিক সতর্ক, এবার তার সাথে পুরো বলকান অঞ্চল তাই বৃদ্ধি পেয়েছে সৈন্য সংখ্যাও। যেখানে পূর্বে সৈন্যসংখ্যা ছিল ৩০ হাজার, এবার সেখানে ৭০ হাজার সৈন্য নিয়ে অটোমানদের আক্রমণ করবেন। ভুকাসিন নিশ্চিত যে, এবার অ্যান্ড্রিয়ানোপল রক্ষা করতে নিশ্চয়ই সুলতান মুরাদ'ই আসবেন। তিনি (ভুকাসিন) ঠিক করলেন সুলতান এলে যুদ্ধ জয়ের পাশাপাশি সুলতানকে হত্যার মধ্যদিয়ে পুরো অটোমান সাম্রাজ্যই গুড়িয়ে দিবেন।

১৩৭১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আবারও মারিৎজার তীরেই ক্যাম্প স্থাপন করে সকাল হওয়ার অপেক্ষা করছেন ক্রুসেডাররা, সকাল হলেই বজ্রপাতের মত গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে অ্যান্ড্রিয়ানোপল। ক্রুসেডারদের গুপ্তচররাও এবার চারপাশে খেয়াল রাখছে, যেন প্রথমবারের মত রাতের অন্ধকারে অটোমানরা আক্রমণ করতে না পারে। সুলতান মুরাদ এবারও তার সেনাবাহিনীর বিশাল অংশ নিয়ে এশিয়া মাইনরে অবস্থান করছেন। রাজা ভুকাসিন কোনকিছুর পুনরাবৃত্তি না চাইলেও এবারও ক্রসেডারদের মনে যুদ্ধ জয়ের আনন্দের পুনরাবৃত্তি ঠিকই হল। তারা ভাবতে লাগলেন সুলতান অ্যান্ড্রিয়ানোপল পৌঁছাবার আগেই তারা আক্রমণ করবে এবং বিজয় নিশ্চিত করবে।

ইতোমধ্যে আগাম জয়ের উল্লাস চলছে ক্রুসেডার শিবিরে। আগেরবারের মত শাহীন পাশা এবারও রাতের অন্ধকারে মাত্র ৮০০ সেনা নিয়ে এগিয়ে আসছেন তবে তিনি এবার যুদ্ধ জয়ের আশায় নয় এবার তিনি আসছেন শহীদ হওয়ার মনবল নিয়ে।

স্বাভাবিকভাবেই ৮০০ যোদ্ধা নিয়ে কোনো জেনারেল ৭০ হাজার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের জন্য লড়তে যাবেন না। শাহীন পাশা একজন চৌকস জেনারেল, তার পরিকল্পনা ৮০০ যোদ্ধা নিয়ে মারিৎজার তীরে শহীদ হবার, সাথে যতটা সম্ভব ক্রুসেডারদের ক্ষয়ক্ষতি করা যায়, যেন পরবর্তীকালে সুলতান এসে সহজেই অ্যান্ড্রিয়ানোপল পুনরুদ্ধার করতে পারেন।

এবার যেহেতু ক্রুসেড বাহিনী সংখ্যা ৭০ হাজার, তাই ৮০০ গাজি বাহিনী নিয়ে সম্মুখে লড়া যাবে না বা ৮০০ জন একসাথে হয়েও অতর্কিত হামলা করা যাবে না কারন এতে ক্ষয়ক্ষতি খুব একটা হবে না।

তাই মারিৎজার তীরে ৮০০ গাজি যোদ্ধা একত্র হয়ে দুটো প্রধান দলে বিভক্ত হয়। দল দুইটির নেতৃত্বে শাহীন পাশা ও এভ্রোনাস গাজি। দুদিক থেকে দুটো দল আক্রমণ করবে। বড় দুটি দল আবার চারজনের ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে গেছে। ছোট একেকটি দল ঘুমিয়ে থাকা ক্রুসেডারদের তাঁবুর ভেতরে প্রবেশ করবে, এরপর 'হাইদির আল্লাহ!' বলে চলবে আক্রমণ এবং তাঁবুর সবাইকে হত্যা না করে কেউ তাঁবু থেকে বের হবে না।

মুহূর্তেই শুরু হল আক্রমণ, একেকটা তাঁবু যেন গোরস্থানে পরিণত হচ্ছিল। এভ্রোনাস ঢুকে পরলেন ভুকাসিনের তাঁবুতে, হত্যা করলেন ভুকাসিনকে। সেই সাথে ডেস্পট উগলেসা নিহত হন শাহীন পাশার হাতে।

যতক্ষণে সব ক্রুসেডার সৈন্য জেগে উঠল, ততক্ষণে রাজা ভুকাসিনসহ অনেক লর্ড মারা গিয়েছেন এবং ২০ হাজার ক্রুসেডার সৈন্য মৃত প্রায়। বাকি ক্রুসেডার যোদ্ধারা আতঙ্কিত হয়ে চারদিকে পালাতে শুরু করে এবং নদীতে ঝাঁপিয়ে পরে। এভাবেই ছত্রভঙ্গ ক্রুসেডার বাহিনী পরাজিত হয় গাজিদের হাতে।

ক্রুসেডারদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও শাহীন পাশার অসাধারণ কৌশল ও মনোবল সেদিন মারিৎজার তীরে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করেছিল।

ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ গেরিলা যুদ্ধের একটি যেমন এই ব্যাটল অভ মারিৎজা, তেমনি সার্বিয়ান সাম্রাজ্য ধ্বংসের মূল কারণও। মারিৎজার যুদ্ধ জয়ের পরেই পুরো বলকান অঞ্চলে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে অটোমানরা।

যুদ্ধটি বলকান জয় করার জন্য ওসমানীয় অভিযানের একটি অংশ ছিল। এর আগে ওসমানীয়রা আধুনিক বুলগেরিয়ায় সোজোপল দখল করেছিল এবং পরে আধুনিক গ্রীসের ড্রামা, কাভেলা এবং সেরাই শহর দখল করে সফল হয়েছিল।



0
0
0.000
0 comments